নিয়মিত কলা খাওয়ার উপকারিতা কতটা জেনে নিন-কলার পুষ্টিগুন
কলা খাওয়ার উপকারিতা অনেক,পৃথীবির প্রাই সব অঞ্চলে কলা জন্মায়।কলা সপুষ্পক
উদ্ভিদ। কলা সাধারণত উষ্ণ দেশগুলোতে ভালো জন্মায়। তবে এর উৎপত্তিস্থল
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশেই একটি জনপ্রিয় ফল।
বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন এলাকায় কলা চাষ করে আসছে।
বাংলাদেশে কলা চাষের একটি বড় সুবিধা হল এটি সারা বছর প্রায় সব এলাকার উচু
জায়গায় চাষ করা যায়। এছাড়াও গ্রাম অঞ্চলে আশেপাশে পুকুরের পাড়ে নদীর ধারে
অথবা বাড়ির পাশে সব জায়গাতেই কলা চাষ করা যায়। জানেন কি নিয়মিত কলা খাওয়ার
উপকারিতা কতটা। প্রিয় পাঠক কলা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত নিচে দেয়া
হলো।
সূচিপত্রঃ নিয়মিত কলা খাওয়ার উপকারিতা কতটা জেনে নিন-কলার পুষ্টিগুন
ভুমিকা
কলা খাওয়ার উপকারিতা বিভিন্ন গুনে সমৃদ্ধ একটি ফল কলা। এর পুষ্টির গুনা অনেক
প্রিয় পাঠক আজকে আমরা জানবো, পাকা কলার উপকারিতা, কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারিতা,
সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা, রাতে কলা খাওয়ার উপকারিতা, কাঁঠালি কলা খাওয়ার
উপকারিতা ,কি কি খেলে কলা খাবেন না ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করব।
পাকা কলা খাওয়ার উপকারিতা
পুষ্টিগুণে ভরপুর কলা এ কলা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেকভাবে সাহায্য করে থাকে।
কলা আমাদের দেহকে সুস্থ ও সবল রাখতে সাহায্য করে। চলুন জেনে নেওয়া জাক পাকা কলায়
কি থাকে এর উপকারিতা সম্পর্কে, পাকা কলাতে রয়েছে ভিটামিন এ, পটাশিয়াম,
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, আইরন ইত্যাদি।
- ভিটামিন এঃ ভিটামিন এ এর মূল উৎস কলা। যা আমাদের শরীরের ত্বক, চোখ, হাড় ইত্যাদি কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- পটাশিয়ামঃ পটাশিয়ামের মূল উৎস হচ্ছে কলা। যা হার্ট ও হেলথ গঠনে সহায়তা করে।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্টঃ কলাতে বিভিন্ন রকমের অক্সিডেন্ট রয়েছে যেমন, বিটা-ক্যারোটিন ও সেলেনিয়াম এর উৎস কলা। মানব শরীরের ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।
- আইরনঃ কলা আয়রনের একটি উৎস। যা অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ করতে পারে এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে।
কাঁচা কলা খাওয়ার উপকারিতা
পুষ্টিগুণে ভরপুর কলা হোক সেটা পাকা অথবা কাঁচা। কাঁচা ফল আর উপকারিতা, পাকা
কলার মত কাঁচা কলাতেও রয়েছে ভিটামিন এ ও সি, দ্রবণীয় ফাইবার,আয়রন ইত্যাদি
আয়রনঃ কাঁচা কলাতে রয়েছে আয়রন নামক খনিজ যা আপনার শরীরে রক্ত এবং শক্তি তৈরি
করে।
ভিটামিন এ ও সিঃ কাঁচা করাতে রয়েছে ভিটামিন এ ও সি যা আপনার শরীরকে শক্তিশালী
অসুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন এ চোখের জ্যোতি বাড়াতে সাহায্য করে এবং
ত্বক সুন্দর ও মসৃণ রাখে। ভিটামিন সি শরীরের জীবাণুর বৃদ্ধ লড়াই করে এবং দাঁত
ও মাড়ি শক্তিশালী করে।
আরো পড়ুনঃ কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তির উপায়
দ্রবণীয় ফাইবারঃ দ্রবণীয় ফাইবার হচ্ছে একটি সুপারহিরো মতো যা আমাদের শরীরে
শক্তিশালী এবং সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এটি একটি বিশেষ ধরনের উপাদান যা ফল
সবজি এবং ওটস এর মত খাবারে পাওয়া যায়। আর এটা কাঁচা কলাতেও পাওয়া যায় এজন্য
কাঁচা কলা খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
সকালে কলা খাওয়ার উপকারিতা
প্রতিদিন সকালে একটি খোলা আপনার শরীর করবে আরো শক্তিশালী এবং কাজ করার ক্ষমতা
বাড়িয়ে দেবে। এছাড়াও কলার মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বাড়ায়। সকালে কলা খেলে আপনার দিনের শুরু ভালো হয়। কলাতে রয়েছে
প্রাকৃতিক চিনি যা আপনার শরীরকে দ্রুত শক্তি যোগায়। কলাতে রয়েছে ভিটামিন এ
এবং সি এই ভিটামিন গুলি আপনার শরীরকে সুস্থ করে তোলে এবং আপনার শরীরকে প্রোটিন
তৈরি করতে সাহায্য করে।
এছাড়াও কলা শরীরের কতটা চর্বি সঞ্চয় হচ্ছে তা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
যাদের অতিরিক্ত রক্তচাপ আছে তাদের প্রতিদিন সকালে একটি করে কলা খেলে রক্তচাপ
নিয়ন্ত্রণ করা যায়। প্রিয় পাঠক কলে একটি মুখরোচক ফল যা আপনার জন্য ভালো এবং
আপনার শরীরের জন্য আরো উপকারী। তাই প্রতিদিন সকালে একটি করে কলা খাওয়ার অভ্যাস
গড়ে তুলুন।
কাঁঠালি কলা খাওয়ার উপকারিতা
কাঁঠালি কলার উপকারিতা অন্যান্য কলার মত কাঠালি কলা ও একটি জনপ্রিয় ফল। তবে এর
স্বাদ ও গুণে সামান্য ভিন্নতা আছে। কাঁঠালি কলা এটা একটি বিশেষ ধরনের ফল এটি
মাথাব্যথা ও আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য খুবই উপকারী। এছাড়াও
কাঠালি করার আরো অনেক উপকারিতা আছে। কাঁঠালি কলা কোষ্ঠকাঠিন্য রোগীদের জন্য
খুবই উপকারী । এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং রক্তস্বল্পতা থেকে আমাদের বাঁচাতে
পারে।
দুধ ও কলা খাওয়ার উপকারিতা
পুষ্টিকর খাবারের কথা মনে পড়লে সবার আগে দুধ ও কলার নাম মনে পড়ে। দুধে রয়েছে
প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, যা আপনার হারকে বেড়ে উঠতে এবং শক্তিশালী করতে
সাহায্য করে। আর কলাতে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ভিটামিন এবং ফাইবার যা আপনার
শরীরের বিভিন্ন কাজে আসে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রতিরোধ করে।
আর যদি দুধ কলা একসাথে খাওয়া যায় তাহলে এটা ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন
ফাইবারের কাজ একসাথে করে এতে শরীরের প্রচুর শক্তি যোগায়।কাজ করার ক্ষমতা
বাড়ায় এবং অলসতা দূর করে। এজন্য কম হলেও সপ্তাহে একদিন দুধ ও কলা খাবারে
খাবারের রেসিপিতে রাখবো।
কি কি খেলে কলা খাবেন না
কলা একটি স্বাস্থ্যকর ও সুস্বাদু ফল। তবে সব সময় এটা খাওয়া করা উচিত নয়। আর
খেলেও সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কিছু কিছু মানুষের কাঁচা কলাতে এলার্জি
রয়েছে। এই সমস্যা সেই সমস্ত মানুষের অবশ্যই কাঁচা কলা খাওয়া থেকে দূরে থাকা
উচিত।কলা খাওয়ার পর পানি খেলে পেটে ব্যথা ও অ্যাসিডিটি হতে পারে। আবার এখান
থেকে কোষ্ঠকাঠিন্যর মত রোগের সৃষ্টি হতে পারে তাই কলা খাওয়ার পর চা,পানি, বা
কফি কখনোই খাওয়া উচিত নয় । রাতে শোয়ার আগে কখনো কলা খাবেন না, এতে করে নানা
অসুবিধায় ভুগতে পারেন।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক, কলা একটি স্বাস্থ্যকর ও সুস্বাদু জনপ্রিয় ফল। কলা খাওয়ার যেমন
উপকারিতা আছে তেমনি ক্ষতিকর কিছু দিক রয়েছে।বাংলাদেশের সব অঞ্চলেই কলা চাষ হয়
বিশেষ করে উচ্চ অঞ্চলগুলোতে। প্রিয় পাঠক নিয়মিত কলা খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে
আমি কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা আলোচনা করেছি। পুরোটা পড়ে দেখলে অবশ্যই উপকৃত হবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url