গ্রামীণ অঞ্চলে পান চাষ পদ্ধতি জেনে নিন

সাধারণত পান পাতা খাওয়ার জন্য চাষ করা হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রামীণ অঞ্চলে পান চাষ করা হয়।খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী ও রাজশাহী জেলায় প্রচুর পরিমাণে পান চাষ হয়। এছাড়া অন্যান্য জেলায় পান চাষের বিস্তার দিন দিন বেড়ে চলেছে। প্রিয় পাঠক গ্রামীণ অঞ্চলের পান চাষ পদ্ধতি জেনে নিন
গ্রামীণ অঞ্চলে পান চাষ

সুচিপত্রঃ  গ্রামীণ অঞ্চলে পান চাষ পদ্ধতি জেনে নিন

  • ভূমিকা
  • পান চাষের জন্য মাটি বাছাই
  • পান বরজ তৈরি
  • চারা রোপণ
  • পানি শেচ ব্যবস্থা
  • পান চাষে কীটনাশক এর ব্যবহার
  • শেষ কথা

ভূমিকা

গ্রামীণ অঞ্চলে পান পাতা সারা বছর চাষ হয়ে থাকে। আজকে আমরা জানবো গ্রামীণ অঞ্চলে যেভাবে পান চাষ করা হয়। প্রথমে মাটি বাছাই, পান পাতা চাষের জন্য পান বরজ তৈরি, যেভাবে পানি শেচ দেয়া হয়, যে ভাবেচারা রোপণ করা হয় ও যেভাবে পান চাষে কীটনাশক এর ব্যবহার করা হয় এর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

পান চাষের জন্য মাটি বাছাই

পান চাষ সাধারণত উঁচু এলাকায় ভালো হয়। যেখানে বন্যার পানি কিংবা বর্ষাকালে জমে থাকে এরকম জমি পান চাষের জন্য উপযুক্ত নয়। পান চাষের জন্য বেলে দোআঁশ অথবা এটেল দোআঁশ যুক্ত জমি প্রয়োজন। আশেপাশে জমিতে বড় বড় গাছ থাকলে সে জমিতে পান চাষ ভালো হয় না। এজন্য আগাছা মুক্ত সমতল উচু জমি বাছাই করা খুবই প্রয়োজন।

পান বরজ তৈরি

পান গাছকে রোদ ও প্রবল বাতাসে হাত থেকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজন বরজ তৈরি করা। আর বরজ তৈরি করার জন্য প্রয়োজন বাঁশ, বাঁশের তৈরি খুটি, চারদিকে ঘেরাও করার জন্য প্রয়োজন মাপ মতো লম্বা বাঁশের। আরো প্রয়োজন রোদের হাত থেকে পান গাছকে ছায়া দেওয়ার জন্য বাঁশের তৈরি চিকন করে লম্বা করে কাটা সুচ,সাউন বাতা। এখন অবশ্য অনেকেই বাঁশের পরিবর্তে দড়ি দিয়ে তৈরি করছে। এরপর প্রয়োজন চারিদিকে ঘেরাও করার জন্য চাটা চাটা তৈরি করা হয় ধানের খড়,কলাপাতা,খেজুরপাতা,সুপারি পাতা ইত্যাদি।

চারা রোপণ

সাধারণত পান পাতার চারা রোপন করা হয় কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাসে ।চারা রোপন করার জন্য প্রথমে পান বরজের মধ্যে সুন্দর করে ৫০ থেকে ৬০ সেমি চওড়া রাস্তা তৈরি করতে হবে। তারপর চারা রোপন করার জন্য ৪ থেকে ৬ সেমি পর্যন্ত সারি করে গর্ত করে নিতে হবে। এরপর পান গাছ থেকে পানের মাথার অংশ থেকে ১০ থেকে ১৫ কেটে নিয়ে এসে কাদাও পানি একসাথে মিক্স করে চারা রোপন করে মাটি চাপা দিতে হবে।
যেহেতু এটা  শীতকালের রোপন করা হয়েছে সেজন্য ছাউনি অবশ্যই ভালো হতে হবে অথবা প্রতিদিন কেটে সুন্দর করে চারার ওপর ঢেকে দিতে হবে।২০ থেকে ৩০ দিন পর এটা তুলে ফেলতে হবে। এছাড়াও বর্ষাকালে চারা রোপন করা যায়। তবে কার্তিক থেকে অগ্রহায়ণ মাসে চারা চারা গুলো তৈরি করতে খুবই ভালো হয়। আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি।

পানি সেচ ব্যবস্থা

প্রতি সপ্তাহে একদিন নিয়ম মাফিক পানি সেচ দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে মেঝেতে যাতে অতিরিক্ত পানি জমে না থাকে। অতিরিক্ত পানি জমে থাকলে চারা গোড়ায় লেগে পচন তৈরি হয়ে গাছ মারা যেতে পারে। বর্ষাকালে পান বরজে পানি সেচ দিতে হয় না। অতিরিক্ত খরা প্রভাব ফেললে নিয়ম মাফিক পানি দিতে হবে পানি যাতে বেঁধে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শীতকালেও তেমন পানি পানি সেচ দিতে হয় না। অনেক সময় জমির উর্বরতা নষ্ট বা খরা প্রভাব দেখা দিলে শীতকালে নিয়ম মাফিক পরিমানে অল্প করে পানি সেচ দিতে হয়

পান চাষে কীটনাশক

পান আমাদের বছরে সারা বছরে চাষ হয়ে থাকে। এজন্য পান গাছ অথবা পান পাতায় রোগ বালাই লেগেই থাকে। তাছাড়া চাষ করতে গেলে অবশ্যই কীটনাশকের প্রয়োজন হয়। আজকালকার দিনে কোন কিছু চাষ করতে গেলে অবশ্যই কীটনাশক ও স্যারের প্রয়োজন হয়।

১।পান পাতা পচা রোধ করতে কীটনাশকের প্রয়োজন হয় ২। বিভিন্ন পোকামাকড় থেকে পান পাতা কে রক্ষা করতে কীটনাশকের প্রয়োজন হয় ৩। পানের গোড়া পচা রোগের জন্য কীটনাশকের ব্যবহার হয়। এছাড়াও পান পাতা কে বড় করতে বিভিন্ন ভিটামিন কীটনাশক ঔষধ প্রয়োজন হয়।

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আমি আমার লেখায় গ্রামীণ অঞ্চলে পান চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা তুলে ধরেছি কিভাবে চারা করতে হয়, পান বরজ তৈরি করতে হয় ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করেছি পুরোটা পড়ে থাকলে অবশ্যই উপকৃত হবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url