ম্যাজিস্ট্রেশি পাওয়ারে যেসব ক্ষমতা পাচ্ছেন সেনাবাহিনী

প্রিয় পাঠক আজকের আলোচ্য বিষয় ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ারে যেসব ক্ষমতা পাচ্ছেন সেনাবাহিনী। আমরা কম বেশি সবাই জানি , সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের আইন ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে। পুলিশরা তাদের ক্ষমতা ব্যবহার করতে ভয় করছে।
ম্যাজিস্ট্রেশি পাওয়ারে যেসব ক্ষমতা পাচ্ছেন সেনাবাহিনী

ফলে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা হস্তান্তর করছে সেনাবাহিনীর কাছে। তবে ক্ষমতাটা খুবই কম সময়ের জন্য। প্রিয় পাঠক, ম্যাজিস্ট্রেট পাওয়ারে যে সকল আইনের ক্ষমতা পাচ্ছেন সেনাবাহিনী এই সম্পর্কে জানতে পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন।

প্রথম অংশ

প্রিয় পাঠক, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিরাট ভূমিকা পালন করে আসছে। দেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য। যখন স্বৈরাচারী সরকার পতন হয় ঠিক তখন থেকেই বাংলাদেশ পুলিশ ভেঙে পড়েন । শুধু তাই নয় দেশকে বেহাল অবস্থায় রেখে যে যার মত নিজ দেশে ফিরে যায়। এছাড়া তাদের কোন উপায় ছিল না। দেশকে নিয়ে ঠিক তখনই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী রাষ্ট্রের হাল ধরেন। তখন থেকেই বাংলাদেশে সেরকম আইনি পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না বললেই চলে। আর এ কারণেই দেশে আইনে অবস্থা অচল হয়ে পড়ে। রাষ্ট্রপতি সবকিছু বিবেচনা করে ম্যাজিস্ট্রেট পাওয়ার ক্ষমতা দেন সেনাবাহিনীকে। জেনে নেওয়া যাক কি কি ক্ষমতা পাচ্ছেন সেনাবাহিনী।

ম্যাজিস্ট্রেশি পাওয়ারে যেসব আইনি ক্ষমতা পাচ্ছেন সেনাবাহিনী

আগামী দুই মাসের জন্য দুই মাসের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসের ক্ষমতা পেয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমিশন প্রাপ্ত কর্মকর্তারা। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তত্ত্বাবধানে কাজ করবেন তারা। সরাসরি তল্লাশি করা গ্রেফতার করা এরকম আরো অনেক ক্ষমতা পেয়েছেন তারা। ১৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এই দায়িত্ব পেয়েছেন তারা। সেনাবাহিনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ক্ষমতা প্রাপ্ত কর্মকর্তারা ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮ এর ১৭ টি ধারার অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে। জেনে নেওয়া যাক আইনের এই ধারা অনুযায়ী একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কি কি ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন।

১। ধারা ৬৪ঃ ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে অপরাধ সংগঠন হলে খুব সেই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার সাথে সাথে হেফাজতে রাখতে রাখতে পারবেন।
২ঃ ধারা ৬৫ঃ ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে পারবেন।
৩ঃ ধারা ৮৩, ৮৪ ও ৮৬ঃ ওয়ারেন্ট অনুমোদন করার ক্ষমতা ও ওয়ারেন্টের অধীনে গ্রেপ্তারকৃত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে অপসারণ এর আদেশ দেওয়ার ক্ষমতা।
৪ঃ ধারা ৯৫(২) ঃ নথিপত্র ইত্যাদির জন্য ডাক ও টেলিগ্রাফ কর্তৃপক্ষের দ্বারা অনুসন্ধান এবং আটক করার ক্ষমতা পাচ্ছেন।

৫ঃ ধারা ১০০ঃ ভুলভাবে বন্দি ব্যক্তিদের হাজির করার সাথে সাথে অনুসন্ধান ওয়ারেন্ট জারি করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
৬ঃ ধারা ১০৫ ঃ সরাসরি তল্লাশির ক্ষমতা ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে যে কোন স্থানে কোন সময়ের জন্য সার্চ ওয়ারেন্টি করার ক্ষমতা পেয়েছেন।
৭ঃ ধারা ১০৭ ঃ শান্তি বজায় রাখার জন্য নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় ক্ষমতা।
৮। ধারা ১০৯ঃ ভবঘুরে এবং সন্দেহ ভজন ব্যক্তির সদাচরণের জন্য নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তা ক্ষমতা পেয়েছেন।

৯। ধারা ১১০ঃ অভ্যাসগত অপরাধীর সদাচরণের জন্য নিরাপত্তা প্রয়োজনীয় ক্ষমতা ।
১০। ধারা ১২৬ঃ জামিনের নিষ্পত্তি করার ক্ষমতা।
১১। ধারা ১২৭ ঃ বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার আদানের ক্ষমতা।
১২। ধারা ১২৮ঃ বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য সামরিক শক্তি ব্যবহার করার ক্ষমতা।
১৩। ধারা ১৩০ঃ বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গার করার জন্য সামরিক শক্তি ব্যবহার করার ক্ষমতা
১৪। ধারা ১৩৩ ঃ স্থানীয় উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে ক্ষেত্রবিশেষে ব্যবস্থায়ী হিসেবে আদেশ জারি করার ক্ষমতা
১৫। ধারা ১৪২ঃ জনসাধারণের অসুবিধার সৃষ্টি ক্ষেত্রে অবিলম্বে ব্যবস্থা হিসেবে আদেশ জারি করার ক্ষমতা।

উল্লেখিত ক্ষমতা ছাড়াও যেকোনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে মোবাইল কোড আইন ২০০৯ এর অধীনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য সরকার এবং সেই সাথে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা সংশ্লিষ্ট এখতিয়ারের মধ্যে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এই আইনের অধীনে নির্ভয়ে ম্যাজিস্ট্রেট তার উপস্থিতিতে সংঘটিত অপরাধ বা ঘটনাস্থলে তার বা তার সামনে উন্মোচিত হওয়া অপরাধগুলো বিবেচনায় নিতে পারবেন।

শেষ অংশ

প্রিয় পাঠক, ক আজকের আলোচ্য বিষয় ম্যাজিস্ট্রেশি পাওয়ারে যেসব ক্ষমতা পাচ্ছেন সেনাবাহিনী আশা করছি এ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। প্রিয় পাঠক, আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। এবং অবশ্যই কমেন্ট বক্সে আপনার মূল্যবান মতামতটি জানাবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url